Type Here to Get Search Results !

ইরানে ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে নিন্দা না জানিয়ে নয়াদিল্লি কী করতে চাচ্ছে!?

Abdul Jabbar


                                               বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও নরেন্দ্র মোদী। ছবি- ওড়িশাপোস্ট

সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) ইরানের ওপর ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়েছে। তবে এই নিন্দার বিবৃতিতে ভারত অংশগ্রহণ করেনি। এই পরিস্থিতি জোটের মধ্যেই মতপার্থক্যের ইঙ্গিত দেয়। ভারতের এই অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে— তারা কি ইসরায়েলের পক্ষে দাঁড়াচ্ছে, নাকি এটি কৌশলগত ভারসাম্য বজায় রাখার একটি পদক্ষেপ?

এসসিও কী বলেছে?

চীনের নেতৃত্বাধীন এই নিরাপত্তা-রাজনৈতিক জোটে মোট ১০টি দেশ রয়েছে, যার মধ্যে আছে চীন, রাশিয়া, ইরান, ভারত। সম্প্রতি ইসরায়েল তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে ২০০-এর বেশি প্রাণহানি ঘটিয়েছে, যাদের মধ্যে ছিল বেসামরিকরা, পরমাণু বিজ্ঞানী এবং আইআরজিসির উচ্চপদস্থ কমান্ডার।
এসসিও তাদের বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে, এই হামলা আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘ সনদের পরিপন্থী। তারা এটিকে ইরানের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে আঘাত হিসেবে দেখেছে, যা শুধু আঞ্চলিক নয়, বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যও বিপদজনক।

ভারতের আলাদা মনোভাব

ভারত স্পষ্ট জানিয়েছে, তারা এসসিও’র ওই নিন্দা বিবৃতিতে অংশ নেয়নি এবং অনুমোদন দেয়নি। তাদের বক্তব্য, তারা ইসরায়েল ও ইরানের সঙ্গে সমান্তরাল ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চায় এবং উভয় পক্ষকে সংযম ও শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানায়।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করেন এবং সেখানেও নিরপেক্ষতাই বজায় রেখেছেন, সরাসরি ইসরায়েলকে দোষারোপ না করে শান্তি চাইছেন।

ভারত কি ইসরায়েলের পক্ষে?

সরাসরি নয়, তবে ভারত যখন ইসরায়েলবিরোধী কোনো বিবৃতিতে সই করেনি, তখন তা ইসরায়েলের পক্ষে কৌশলগত সুবিধা হিসেবে দেখা হয়েছে। এর আগেও জাতিসংঘে গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের ওপর ভারত বিরত থেকেছে।
বিশ্লেষক কবীর তানেজা মনে করেন, এর পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি এবং ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থানের প্রভাব রয়েছে। জুলাইয়ের আগেই যুক্তরাষ্ট্র ভারতের ওপর ২৭% শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিল, যা নিয়ে ভারত আলোচনা করছে।

ভারসাম্য রক্ষার কূটনীতি

ভারতের এই অবস্থান মূলত স্বার্থকেন্দ্রিক। একদিকে এসসিও’র বিবৃতিতে সই না করে চীন-রাশিয়া-ইরানের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখছে, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে বাণিজ্য ও নিরাপত্তার স্বার্থ রক্ষা করতে চায়।

কিন্তু এই ভারসাম্য কতদিন টিকবে, তা নির্ভর করবে সংঘাত কতটা দীর্ঘ ও তীব্র হয় তার ওপর।
অনেকে এই কৌশলকে ভারসাম্য রক্ষার প্রচেষ্টা হিসেবেই দেখেন। কারণ, ইসরায়েল ভারতের প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী দেশগুলোর অন্যতম, এবং গাজা যুদ্ধে ভারতীয় কোম্পানিও ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি করেছে। অপরদিকে, ইরানের সঙ্গে জ্বালানি আমদানি ও চাবাহার বন্দরের মতো বড় বিনিয়োগ রয়েছে, যা ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।


সূত্র: আল-জাজিরা



About Us

সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি: ফয়সল আহমদ