ইরানে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ হামলার রেশ: বিশ্ববাজারে তেলের দাম ৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চে, হরমুজ প্রণালিতে উত্তেজনা
ইরানে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের ধারাবাহিক ও নজিরবিহীন যৌথ হামলার পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্ববাজারে তেলের দাম গত পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। সোমবার (২৩ জুন) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক বিশেষ প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানে টার্গেট করে চালানো সামরিক অভিযানের ফলে শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, পুরো বিশ্বের জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়েছে। বাজারে একধরনের অনিশ্চয়তা ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, যা সরাসরি প্রভাব ফেলেছে তেলের দামে।
বিশ্বের মানদণ্ড হিসেবে পরিচিত ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ব্যারেলপ্রতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৮.৯৩ ডলার, যা আগের দিনের তুলনায় ১.৯২ ডলার বেশি। একইভাবে, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ মানদণ্ড ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) তেলের দামও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫.৭৩ ডলার, যা ১.৮৯ ডলার বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়।
তেলের দামের এই ঊর্ধ্বগতি মূলত রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সম্ভাব্য সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা থেকেই ঘটছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরান-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা ও ইসরায়েলের আগ্রাসী ভূমিকাই এই বাজারচাঞ্চল্যের মূল কারণ।
এদিকে, ইরান ঘেঁষা অতি সংবেদনশীল ও কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালি হয়ে তেল পরিবহন নিয়েও দেখা দিয়েছে বড়সড় সংকট। নিরাপত্তার কারণে তেলবাহী জাহাজগুলো বাধ্য হচ্ছে বিকল্প রুট ব্যবহার করতে। ইতোমধ্যে হরমুজ প্রণালির রুট থেকে অন্তত দুটি তেলবাহী ট্যাংকারকে ফিরিয়ে নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে আগামী দিনগুলোতে জ্বালানি তেলের দাম আরও ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে। এর ফলে বিশ্ব অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে জ্বালানিনির্ভর উন্নয়নশীল দেশগুলো পড়তে পারে কঠিন বিপাকে।
স্টাফ রিপোর্টার