Type Here to Get Search Results !

ছবির সঙ্গে কথা বলেন মা, বিচারের আশায় জায়নামাজে কাঁদেন বাবা

Abdul Jabbar

 

ছবি/ শহিদ ফারহান ফাইয়াজ ও উনার মা


১৮ জুলাই একটি তারিখ—যে দিনটি কেড়ে নিয়েছে অসংখ্য স্বপ্ন, অসংখ্য সম্ভাবনাময় প্রাণ। তাদেরই একজন ছিলেন ফারহান ফাইয়াজ—রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী। এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া এই তরুণ যদি বেঁচে থাকতেন, হয়তো এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন। আজ তিনি নেই, আছেন শুধুই স্মৃতিতে।

এক বছর পেরিয়ে গেলেও ছেলেকে ছুঁয়ে দেখতে না পারার বেদনায় ভেঙে পড়েন তার বাবা-মা। কবরের কাছে গিয়ে ছেলের অস্তিত্ব খুঁজে ফেরেন বাবা শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া। তিনি বলেন,

“এইচএসসির পর ছেলেকে ওমরায় নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। দুবাই যাওয়ারও ইচ্ছা ছিল ওর। সেই স্বপ্নগুলো আর পূরণ হলো না—এই ভাবনাগুলো কষ্ট দেয় প্রতিদিন।”

বিচারের দীর্ঘসূত্রতায় ক্ষোভ লুকোতে পারেন না তিনি।

“বিচারটা সবচেয়ে আগে পাওয়ার কথা ছিল। এখন সবাই নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। আমি জানি না আদৌ বিচার হবে কিনা। তাই জায়নামাজে বসে আল্লাহর কাছে বিচার চাই।”

ফাইয়াজের মা ফারহানা দিবা এখন শুধু ছবির সঙ্গেই কথা বলেন। স্মৃতিগুলো এতটাই তীব্র যে কাপড়চোপড় কিংবা ব্যবহৃত জিনিসপত্র স্পর্শ করতে ভয় লাগে।

“ছোটবেলায় দুই ভাইবোনের মধ্যে লেগে থাকত ঝগড়া—কে আম্মুর সঙ্গে ঘুমাবে। ও চাইলেই আমার পাশে ঘুমাতে হতো।”

ভাইহীন বাস্তবতায় মানিয়ে নিতে পারছে না ছোট বোন ফারিন।

“ভাইয়া ডাকলেই বুকটা কেঁপে উঠে। এখন আর কাউকে ভাইয়া বলতেও ইচ্ছে করে না।”

২০২৪ সালের ১৮ জুলাই রাজধানীর ধানমন্ডিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ফাইয়াজ। স্বজনেরা আজও সেই ঘটনার বিচার ও সত্য উদঘাটনের অপেক্ষায়। তারা চান, এই আত্মত্যাগ যেন বৃথা না যায়—যে পরিবর্তনের আশায় তরুণ প্রাণগুলো জীবন দিয়েছে, তা যেন একদিন বাস্তবে রূপ নেয়।

About Us

সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি: ফয়সল আহমদ