স্টাফ রিপোর্টার সাদি
৬ অক্টোবর
নিজের অসুস্থতা ও চিকিৎসা না পাওয়ায় আদালতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক শিক্ষা ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সোমবার (৬ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালতে রিমান্ড শুনানিতে তিনি বলেন,
“সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন। আমাদের কি মরিয়া প্রমাণ করা লাগবে, আমরা অসুস্থ ছিলাম?”
এদিন সকালে শাহবাগ থানার জুট ব্যবসায়ী মনির হত্যা মামলায় ডা. দীপু মনিকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। শুনানির সময় তার পক্ষে আইনজীবী গাজী ফয়সাল ইসলাম জামিনের আবেদন জানিয়ে বলেন, “আমার মক্কেল দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আছেন, শারীরিকভাবে অসুস্থ। এজাহারে শুধু তার নাম আছে, কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই।
আদালতের অনুমতি পেয়ে বক্তব্যে দীপু মনি জানান, গত মাসে অসুস্থ হয়ে তিনি তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় পরীক্ষা সম্পন্ন করা যায়নি। অন্য হাসপাতালে নেওয়ার অনুমতি মিললেও পুলিশ স্কোয়াড না থাকায় তা সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, “রোববার হাসপাতালে নেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু পরিবর্তে আজ আমাকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। চিকিৎসা না পেয়ে আমি ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি।”
দীপু মনি অভিযোগ করেন, তার বিরুদ্ধে ৬০টিরও বেশি মামলা থাকলেও আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ সীমিত করা হয়েছে। “গত এক বছরে মাত্র তিনবার আইনজীবীর সঙ্গে দেখা হয়েছে,” বলেন তিনি।
রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী এ সময় বলেন, “জেল কোড অনুযায়ী সাক্ষাতের সুযোগ রয়েছে। রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য হাসপাতালে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তখন সাবেক মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে দীপু মনি বলেন, “তিনি চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন, আমরাও সেই পথে যাচ্ছি।”
শুনানি চলাকালে আইনজীবীদের মধ্যে তর্ক-বিতর্কও দেখা দেয়। সাবেক এমপি সোলায়মান সেলিম বলেন, “এখানে লিগ্যাল আর্গুমেন্ট হচ্ছে, সবাই কি রাষ্ট্রপক্ষের?”
পাশ থেকে একজন বলেন, “গায়ে এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে।” জবাবে সেলিম বলেন, “তাই বলে কি আমরা চিকিৎসা পাব না?
দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত দীপু মনিকে চার দিনের রিমান্ডে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। একইসঙ্গে শাওন সিকদার হত্যা মামলায় সাবেক এমপি সোলায়মান সেলিমকেও গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেওয়া হয়।
মনির হত্যা মামলা
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট শাহবাগের চানখাঁরপুল এলাকায় জুলাই আন্দোলনের সময় জুট ব্যবসায়ী মো. মনির গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। নিহতের স্ত্রী রোজিনা আক্তার ১৪ মার্চ শাহবাগ থানায় মামলা করেন। মামলায় ৩৫১ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
শাওন হত্যা মামলা
এছাড়া ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রাজধানীর ইডেন কলেজের সামনে শাওন সিকদার গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। এ ঘটনায় এ বছরের জানুয়ারিতে আত্মীয় পরিচয়ে ইকবাল মজুমদার তৌহিদ শেখ হাসিনাসহ ৪০ জনকে আসামি করে লালবাগ থানায় মামলা করেন।