এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশঃ জিপিএ ৫ এবং পাশের হারে নামলো ধ্বস।


প্রকাশিত:


ফিচার সম্পাদক: তাকি হাসান

১০ জুলাই ২০২৫ 

ছবি/ এসএসসি শিক্ষার্থী

আজ বৃহস্পতিবার (১০ই জুলাই) দুপুর ২টায় চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত ফলাফলে সারাদেশে পাশের হার ৬৮.৪৫ শতাংশ, গত বছর এই হার ছিলো ৮৩.০৩ শতাংশ।গত বছরের তুলনায় পাশের হার চলতি বছরে প্রায় ১৫ শতাংশ কম। 

তাছাড়া এবার এসএসসিতে জিপিএ-৫ এর সংখ্যাও গাণিতিক হারে কমেছে। এবারের মোট জিপিএ-৫ সংখ্যা ১,৩৯,০৩২ টি যা গত বছর ছিলো ১,৮২,১২৯ টি। অর্থাৎ দুই বছরের জিপিএ-৫ এর মধ্যে তফাৎ প্রায় ৪৩ হাজার। 


বোর্ডে গুলোর মধ্যে পাশের হারে সবচেয়ে এগিয়ে রাজশাহী বোর্ড (৭৭.৬৩ শতাংশ) এবং সবচেয়ে পিছিয়ে বরিশাল বোর্ড (৫৬.৩৮ শতাংশ)। অন‍্যান‍্য বোর্ডের পাশের হার যথাক্রমে, যশোর শিক্ষা বোর্ড পাসের হার ৭৩.৬৯ শতাংশ, কারিগরিতে পাসের হার ৭৩.৬৩ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৭২.০৭ শতাংশ, মাদ্রাসায় ৬৮.০৯ শতাংশ, সিলেটে ৬৮.৫৭ শতাংশ, ঢাকা বোর্ডে ৬৭.৫১ শতাংশ, দিনাজপুরে ৬৭.০৩ শতাংশ, কুমিল্লায় ৬৩.৬০ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৫৮.২২ শতাংশ। 


জিপিএ-৫ এ সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে ঢাকা বোর্ড (৩৭ হাজার ৬৮ জন) এবং সবচেয়ে কম পেয়েছে কারিগরি বোর্ডে (৪ হাজার ৯৪৮ জন)। অন‍্যান‍্য বোর্ডের জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংখ্যা যথাক্রমে, রাজশাহী বোর্ডে ২২ হাজার ৩২৭ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ৯ হাজার ৯০২ জন, যশোর বোর্ডে ১৫ হাজার ৪১০ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ১১ হাজার ৮৪৩ জন, বরিশাল বোর্ডে ৩ হাজার ১১৪ জন, সিলেট বোর্ডে ৩ হাজার ৬১৪ জন, দিনাজপুর বোর্ডে ১৫ হাজার ৬২ জন, ময়মনসিংহ বোর্ডে ৬ হাজার ৬৭৮ জন, মাদ্রাসা বোর্ডে ৯ হাজার ৬৬ জন। 


বরাবরের মতো গড় পাশের হারে ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীরা এগিয়ে। ছাত্রীদের গড় পাশের হার ৭১.০৩ শতাংশ এবং ছাত্রদের ৬৫.৮৮ শতাংশ। এ নিয়ে টানা ১০ বছর এসএসসিতে পাসের হারে এগিয়ে ছাত্রীরা।


একইসাথে জিপিএ-৫ এর সংখ্যায় ও এগিয়ে মেয়েরা। ছাত্রীদের মোট জিপিএ-৫ সংখ্যা ৭৩,৬১৬ জন অন‍্যদিকে ছাত্রদের মোট জিপিএ-৫ সংখ্যা ৬৫,৪১৬ জন। 


বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় পাশের হার হ্রাস পাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো—বিগত বছরগুলোর মতো শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক বা অতিরঞ্জিতভাবে পাশ করিয়ে দেওয়ার প্রচলিত ‘কালচার’ থেকে সরে আসা। এই পরিবর্তন শিক্ষার্থীদের জন্য হয়তো সাময়িকভাবে কিছুটা চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করেছে, তবে দীর্ঘমেয়াদে এর ফলাফল হবে ইতিবাচক। 

বাস্তবমূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত সক্ষমতা যাচাই করা গেলে তারা ভবিষ্যতে আরও দক্ষ, আত্মবিশ্বাসী ও সুশিক্ষিত হয়ে উঠবে। একইসঙ্গে, এতে দেশের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা আরও স্বচ্ছ, মানসম্পন্ন ও টেকসই হবে।


অতএব, পাশের হার কমলেও এটি শিক্ষার মানোন্নয়নের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা উচিত।