কুড়িগ্রামে রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশ


প্রকাশিত:

 

  রফিকুল ইসলাম রফিক, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি


“জাগো কৃষক, সংঘবদ্ধ হও” — এই স্লোগানকে সামনে রেখে কুড়িগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশ।

বুধবার (৯ জুলাই ২০২৫) সকাল ১০টার দিকে কুড়িগ্রাম শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের শাপলা চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত কৃষকরা অংশ নেন। সমাবেশে বক্তারা ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিকে খাস খতিয়ানে রেকর্ড করার অভিযোগের প্রতিবাদ জানান এবং এর বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান গ্রহণের আহ্বান জানান।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কুড়িগ্রাম জেলা রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলনের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম জুয়েল। এতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন, ঢাকা জেলা কমিটির আহ্বায়ক লিটন কবিরাজ, লালমনিরহাট জেলা কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল হামিদ এবং স্থানীয় কৃষকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন হলোখানা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মকবুল হোসেন, কৃষক সাইফুল ইসলাম, এরশাদুল হক ও রফিকুল ইসলাম।

বক্তারা বলেন, সরকারের বিভিন্ন দপ্তর এখন ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিকে খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। পয়স্তি ও শীকস্তি আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখলে থাকা কৃষকদের জমি কেড়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এর ফলে প্রকৃত মালিকরা জমির মালিকানা হারিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

বিশেষভাবে বক্তারা কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার আরাজী পলাশবাড়ী মৌজার কথা তুলে ধরেন। সেখানে বহু কৃষকের জমি আর.এস. রেকর্ডে ভুলভাবে খাস খতিয়ান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট জমির যাবতীয় কার্যক্রম এস.এ. রেকর্ড অনুসারে পরিচালনার দাবি জানান বক্তারা। একই সঙ্গে সরেজমিনে তদন্ত করে, প্রয়োজনে বিশেষ ধারা সংযোজন করে, প্রকৃত মালিকদের নামে জমি পুনরায় রেকর্ডভুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়।

বক্তারা আরও বলেন, কৃষকের জমির ওপর তার মালিকানা নিশ্চিত না হলে দেশের কৃষি ব্যবস্থা বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। খাদ্য নিরাপত্তাও হুমকিতে পড়বে, যা জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে জমি রেকর্ড সংশোধন করে কৃষকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানান তাঁরা।

সমাবেশ শেষে কৃষকরা শান্তিপূর্ণভাবে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন, যা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। আন্দোলনের নেতারা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন এবং পরবর্তী কর্মসূচির ঘোষণা যথাসময়ে দেওয়া হবে।